হাস্য-কৌতুকের আসর


জীবনকে আনন্দময় করে তোলা এবং সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন করার জন্য হাসি  বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।হাসি জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দেয়, জীবনযাপন সহজ করে তোলে।একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আনন্দময় হাসির সাথে সাথে শরীরে এন্ডোরফিন ও সেরোটনিন নিঃসরণ হয়। আর এন্ডোরফিনকে বলা হয় natural pain killer। হাসি স্ট্রেস হরমোনগুলোর নিঃসরণ কমিয়ে দেয়, যার ফলে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।অনেকে মনে করে কঠিন বিরূপ পরিস্থিতিতে অবলীলায় হাসতে পারাটা এক বিরল গুন। আমরা যখন হাসতে থাকি, তখন কোন বিষণ্ণতা, ক্রোধ, দুশ্চিন্তা বা দুঃখবোধ আমাদের গ্রাস করতে পারে না। হাসি আমাদের মনকে ভালো করে দেয় এবং এই ভালো লাগা রয়ে যায় হাস্য-কৌতুকের পরিবেশ থেকে চলে আসার পরও অনেকক্ষণ।
তাই হয়তো কবি হাসির কবিতা লিখে গেছেনঃ-
হাসতে নাকি জানে না কেউ
কে বলেছে ভাই,
এই শোন না কত হাসির
খবর বলে যাই
খোকন হাসে ফোকলা দাঁতে,
চাঁদ হাসে তার সাথে সাথে,
কাজল বিলে শাপলা হাসে,
হাসে সবুজ ঘাস,
খলসে মাছের হাসি দেখে,
হাসেন পাতিহাঁস
…”
কবির মত করে দেখি আমিও আপনাদের হাসির কথা শুনাতে পারি কিনা।নিচের কৌতুকগুলো দেখি আমাদের কেমন হাসাতে পারে।
১.
সমস্ত শরীরে ফোলা দাগ নিয়ে এক রোগী ডাক্তারের কাছে গেল। ডাক্তার রোগীকে দেখে কোনো রোগই ধরতে পারলেন না। অবশেষে নিজের অক্ষমতা ঢাকতে
ডাক্তার : এই রোগটা কি আপনার আগেও হয়েছিল?
রোগী : জি আগে একবার হয়েছিল। কিন্তু ডাক্তার সাহেব এটা আমার কী রোগ?
ডাক্তার : এটা আপনার আগের সেই রোগই।
২.
গ্রামের স্কুল। পঞ্চম শ্রেনীর এক ছাত্র তার শিক্ষককে জিজ্ঞেস করলো  স্যার, পিলার বানান কি? শিক্ষক উত্তর দিলেন- Pilar ছেলেটি একটু চুপ থেকে বললো  স্যার আমার বড় ভাই কলেজে পড়ে, সে বললো পিলার বানান নাকি - Pillar! শিক্ষক মহাদয় একটু চিন্তা করে বললেন  পিলার বানানে একএল দিলেও হয় তবে দুই এল দিলে Pillarটা একটু পোক্ত হয়।
৩.
দিপু : চলতো টিপু চোখের ডাক্তারের কাছে যাই।
টিপু : কেন?
দিপু : আমি দূরের জিনিস দেখতে পাচ্ছি না।
টিপু : তোর চোখ তো একদম ঠিক আছে।
দিপু : (রাগান্বিত হয়ে) তুই কী করে বুঝলি?
টিপু : ওই যে সূর্যটা দেখতে পাচ্ছিস?
দিপু : হ্যাঁ পাচ্ছি!
টিপু : তাহলে আর কতো দূরের জিনিস দেখবি?
৪.
বিখ্যাত এক শহর। সেই শহরের বিশাল এক দোকানে অনেক মূল্য হ্রাস ঘোসনা করলো। যে দিন সকাল থেকে মূল্যহ্রাস শুরু। তার আগের দিন রাত থেকেই দোকানের গেটে প্রচুর লোক লাইন ধরলো। সকাল ৮টার দিকে বিশাল দেহী এক লোক শিষ দিতে দিতে ভীড় ঠেলে দোকানের গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু রাত থেকে লাইন দেওয়া লোকজন তার বিশাল দেহের তোয়াক্কা না করে সবাই মিলে ধাক্কা দিয়ে তাকে পেছনের দিকে ঠেলে দিল। লোকটি কিছুটা অবাক হলো, জীবনে কেউ কোনদিন এভাবে ধাক্কা দেয়নি তাকে। যাই হোক, সে আবার ভিড় ঠেলে গেটের দিকে যাবার চেষ্টা করলো। এবারে সবাই মিলে তাকে চ্যাংদোলা করে দূরে লাইনের শেষে নিয়ে গিয়ে ফেলে দিল। সে এবার উঠে দাড়িয়ে জামার হাত গুটিয়ে বললো  দেখুন আমাকে সামনে যেতে দিন তা না হলে ভালো হবে না বলে দিচ্ছি, বলেই সে আবার সামনের দিকে যেতে চেষ্টা করতেই লোকজন তাকে ধরে চ্যাং দোলা করে আবার পেছনে ফেলে দিল। এবার সে এক লাফে উঠে দাড়িয়ে বললো  ঈশ্বরের কছম, এবার যদি কেউ আমাকে ছোয় তবে বলে দিলাম আজকে আমি আর দোকানই খুলবো না
৫.
দুই বন্ধুর মধ্যে কথা হচ্ছে
১ম বন্ধু : দেখেছিস, শামুক কত অলস প্রাণী। তিন ঘণ্টা ধরে দেখছি মাত্র দুই ইঞ্চি এগিয়েছে।
২য় বন্ধু : আর তুইই বা কম কিসে। তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় একইভাবে বসে শামুকটাকে দেখছিস।
৬.
এক পাগল পাগলাগারদের পুকুরে গোসল করতে গিয়ে প্রায় ডুবে যাবার উপক্রম হলে অন্য আর একটা পাগল সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে তাকে উদ্ধার করলো। এই খবর শুনে গারদ-কর্তৃপক্ষ উদ্ধারকারী পাগলটাকে ডেকে পাঠালো এবং এ মহৎ কাজ করার জন্য তাকে অনেক বাহবা দিল। তাকে এও বলা হোলো যে, যেহেতু সে মৃত্যুর হাত থেকে একটা মানুষকে বাচানোর বুদ্ধি রাখে ও কৌশল জানে, তাকে আর এ গারদে থাকার প্রয়োজন নাই। যখন খুশি সে চলে যেতে পারে এবং একজন স্বাভাবীক নাগরীকের জীবন জাপন করতে পারে। ঠিক সেই সময়ই এক আর্দালী দৌড়াতে দৌড়াতে এসে খবর দিল- যে লোকটাকে ডুবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুনে কতৃপক্ষ মর্মাহত হলেন এবং উদ্ধারকারীকে বললেন  এটা খুবই দুঃখের কথা। তুমি লোকটাকে বাঁচালে আর সে কিনা আত্মহত্যা করলো। যাই হোক দুঃখ করোনা, তোমার কাজ তুমি করেছ এবং ভাল কাজই করেছো। উদ্ধারকারী পাগল এ সব শুনে মাথা ঝাকিয়ে বললো   না স্যার, ও আত্মহত্যা করেনি, খুব ভিজে গিয়েছিল তাই আমি ওর গলায় দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে গিয়ে শুকাতে দিয়েছি
৭.
এক ফকির আরেক ফকিরকে বলছে ...
-আজকে রাস্তায় ১০০টাকা কুড়াইয়া পাইছিলাম !
-১০০ টাকা দিয়া কি করলি ?
-ফালাইয়া দিছি !
-কেন ?
.
.
.
.
.
.
কথনো কি ১০০ টাকার নোটে তিনটা শুন্য দেখছশ ?
 
৮.
একটা বাচ্চা সারাক্ষণ বুড়ো আঙুল চোষে। তার মা বললেন, তুমি যদি বুড়ো আঙুল চোষো, তোমার পেট ফুলে যাবে।
তার বাড়িতে আসা পাশের বাড়ির সন্তানসম্ভবা মহিলা বেড়াতে এলে বাচ্চা বলল, তোমার পেট কেন ফোলা? তুমি কী করেছ, আমি জানি।
৯.
এক ভদ্রমহিলা বারবার সন্তানের জন্ম দেন। তাঁর ধাত্রীও নির্দিষ্ট। কিন্তু সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় তিনি ব্যথা সহ্য করতে পারেন না। খুব কাঁদেন। ধাত্রীর হাত ধরে প্রতিজ্ঞা করেন, এবারই শেষ। আর কোনো দিন আমি মা হব না।
কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তিনি আবার ধাত্রীর দ্বারস্থ হন। আবার কাতরাতে থাকেন।
ধাত্রী বলে,
কী, আবারও! মহিলা বলেন, এই যে কানে ধরেছি, এবারই শেষ।
কিন্তু পরের বছর তিনি আবারও ধাত্রীর কাছে আসেন পেটে সন্তান নিয়ে।
ধাত্রী বলে,
আপনার ঘটনা কী?
মহিলা বলেন,
আমার বাচ্চাদের বাবা এত মধুর মধুর কথা বলে যে আমি প্রত্যেকবার পটে যাই...এই যন্ত্রণার কথা আমার মনেই থাকে না।
(শেষের দুটি কৌতুক বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আনিসুল হকের লেখা থেকে নেওয়া)
উপরের কৌতুকগুলো পড়ে আপনারা হাসলেন কিনা জানি না।তবে হাসি আসুক আর নাই আসুক আসুন আমরা হাসির কয়েকটি উপকারিতার কথা জানি।
ক.হাসি আমাদের রোগ প্রতিরোধক শক্তিকে উজ্জীবিত করে।
খ.হাসি ব্যথা লাঘব করে।
গ.হাসি মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়।
ঘ.আমরা যখন হাসি তখন আমাদের রক্তচাপ কমে যায়। বৃদ্ধি পায় ন্যাচারাল কিলার সেল যারা হিউমার ধ্বংস করে ও ভাইরাসকে মেরে ফেলতে সক্ষম।
ঙ.প্রাণ খুলে হাসলে শরীর ও মন চাঙা হয়ে উঠে।
এতক্ষন কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।শুভ কামনা রইল।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও নারীর অধিকার 

স্বাধীনতার মাসঃআমাদের অঙ্গীকার